একদা ও অনন্ত একদিনের কাহিনি হলেও দিলারা হাশেম এর মধ্যে অনন্তের বিস্তার এনে দিতে চেয়েছেন। জন্ম-মৃত্যু, বিবাহ তিন পর্বই প্রায় উপস্থিত, জন্ম ও মৃত্যু তো প্রত্যক্ষভাবেই, বিবাহ-ও পরোক্ষ। একটা বিশেষ কাল ও স্থানে লেখিকা তার কাহিনিকে দৃঢ়ভাবে স্থাপন করেছেন অত্যন্ত সুপরিচিত সমকালীন কিছু উল্লেখের দ্বারা। ‘বিটপী’-র বিজ্ঞাপনের জন্য তোলা ছবির কথা আছে, নূর পাগলার অ্যারেস্টের কথা আছে, সুবচন নির্বাসনে ও কখেন দুঃসময় নাটকের উল্লেখ আছে। কাহিনির পশ্চাদপটে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং স্বাধীনতা উত্তরকালের খাদ্যভাব ও অর্থনৈতিক সংকটের চিত্র নির্ভুলভাবে উপস্থিত। মুক্তি সংগ্রাম প্রসঙ্গে পঁচিশে মার্চের নারকীয় হত্যাযজ্ঞের কাহিনিও তীব্রভাবে উপস্থিত উপন্যাসের তৃতীয় পর্বের একেবারে গোড়ার দিকে, বেনু-আপা উপাখ্যানে। দিলারা হাশেমের ভাষা কাব্যময় স্নিগ্ধ উপমাসমৃদ্ধ। সব মিলে একদা এবং অনন্ত আমাদের সমকালীন উপন্যাস সাহিত্য অঙ্গনে একটি বিশিষ্ট শিল্পকর্ম বলে চিহ্নিত হবে বলে আমার বিশ্বাস।
একদা এবং অনন্ত
দিলারা হাশেম