বঙ্গের আদি বাসিন্দা ছিল শবর, পুলিন্দ, নিষাদ প্রভূতি প্রাচীন গোত্রের মানুষ। ঐতিহাসিকরা এদেরই ‘অনার্য’ মানুষ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এই অনার্য মানুষের বসতি স্থাপনের বহু পরে এই অঞ্চলে এক প্রকার জবরদখলের মধ্যদিয়ে আগমন ঘটে ‘আর্যদের’। আর্যদের আগে আগম ঘটে জনগোষ্ঠীর। এরপর অষ্টম শতাব্দীতে বসতি স্থাপন করে সেমেটিক জনগোষ্ঠীর মানুষ।
ইংরেজদের আগমনের বহু আগ থেকে বাংলা অঞ্চলে বাণিজ্যের জন্যে আসে পর্তুগিজ, দিনেমার, পারস্য ও আর্মেনীয়রা। আর এভাবে এই ভূখণ্ডে নানা জাতি-উপজাতি, ধর্ম- বর্ণের মানুষের মিশ্রণ ঘটে। এভাবেই বাংলা ভূখণ্ড হয়ে ওঠে নানা শ্রেণি ও গোত্রের মানুষের মিলিত আবাস ভূমি। এই গ্রন্থের আলোচিত জাতিসত্তার নৃতাত্ত্বিক পরিচয় সে কথাই প্রমাণ করে।
ইতিহাসবিদরা আর্য এবং অনার্ ‘ বলে যে জাতিগত বিভাজন তৈরি করে গেছেন তাতে এদেশের প্রকৃত আদিবাসীদেরই অনার্য বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। সময় এসেছে সেই পুরোনো ধারণা বদলে দেওয়ার। আর্য বলে দাবিদার যে দখলদার জনগোষ্ঠী অতীতে এদেশে আগমন করেছে প্রকৃত অর্থে তারাই ছিল অনার্য জাতি। বাংলাদেশ যেসব জনগোষ্ঠীকে আদিবাসী বলা হয় তারা মূলত আদিবাসী নয়। যারা ভারতের নাগাল্যান্ড, মণিপুর, ,মিজোরাম ও মিয়ানমার থেকে আগত ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী। এই গ্রন্থে তাদের ইতিহাস, ভাষা, শিল্প-সংস্কৃতি ও নৃতাত্ত্বিক বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ইতিহাস
আসাদুজ্জামান আসাদ