বাঙালি জাতির ১৯৫০ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত সময়কালের রাজনৈতিক ,সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাস হচ্ছে বিশাল তাৎপর্যপূর্ণ । এই সময় কালের মধ্যেই বিশে সংগঠিত হয়েছে দুটি মহাযুদ্ধ । ফলে এই উপমহাদেশের মানচিত্রের বদল ঘটেছে কয়েকবার । এতে পরিবর্তন ঘঠেছে সমাজ ও রাষ্ট জীবনের । গাঙ্গেও বদ্বীপ আজকের সাধীন বাংলাদেশের সামাজিক সাংকৃতিক ও রাজনৈতিক ইতিহাস ও এসব ঘটনা থেকে কখনো বিছিন্ন ছিল না । ইতিহাসের নানা বৈচিত্রময় উথান পতনের মধ্যে দিয়ে বাঙালির জাতির জীবনে আসে ১৯৭১ সাল । এমন দুঃসময় আগে কখনো আসেনি তাদের জীবনে , এমন সুসমায় ও দেখেনি তারা। মহান মানবতাবিদ রাজনীতিবিদ বঙ্গবন্ধু শেক মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এই সময় বাঙালি জাতী একটি সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করে । বাঙালি জাতির সেই স্বাধীনতা অর্জনের পথ মোটেও সহজ ছিলনা । দু’শ বছরের ইংরেজ দাসত্ব থেকে ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার নামে বাঙালি জাতিকে প্রবেশ করানো হয় পাকিস্তানী কারাগারে । মূলত স্বাধীনতা আন্দোলনের সূচনা তখন থেকেই । ১৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলন, ১৯৬২ সালের ছাত্র আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গনঅভ্যুন্থান ও ১৯৭০ সালের নির্বাচন প্রভৃতি ছিল পাকিস্তানি অপশাসনের বিরুদ্ধে বাঙলী জাতির জীবনে একেকটি সফল উত্তোরণ । ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করতে গিয়ে বাঙালিরা এক ভয়াবহ দুঃসময় অতিক্রম করেছিল । পাকিস্তানিদের ষড়যন্ত্র, শোষন, বঞ্চনা নিষ্ঠুর তাণ্ডব, ধ্বংসযজ্ঞ ও হত্যালিলা সহ্য করতে হয়েছে বাঙালি জাতিকে । সেসব ঘটনার প্রকৃত ইতিহাস ধারাবাহিক ভাবে তুলে ধরা হয়েছে এই গ্রন্থে । তুলে ধরা হয়েছে দেশভাগের নানা আজানা বিষয় । বাঙালি জাতী ১৯৭১ সালে পাকিস্তানিদের বিরুধে কেন রুখে দাঁড়িছিল, কিভাবে তারা দেশের প্রতিটি অঞ্চলে সংগঠিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল, কেন এককোটি মানুষ শরণার্থি হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলো, মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ভূমিকা কেমন ছিল, মিত্রবাহিনীকে কেন আমরা স্বাগত জানিয়েছিলাম, এদেশের স্বাধীনত বিরোধিরা কি নৃশংস কর্মকাণ্ড চালিয়েছিল, পাকবাহিনী কি ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল এবং এসবের মধ্যে দিয়ে ‘ ৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ৩০ লক্ষ শহীদের আত্নত্যাগের মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল যার বিস্তারিত বিবারন তুলে ধরা হয়েছে এই গ্রন্থে । যা থেকে পাঠক বাঙালি জাতির আত্মমর্যাদা লাভের দীর্ঘ হতিহাস খুঁজে পাবেন ।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও শরণার্থী শিবির
আসাদুজ্জামান আসাদ