স্মৃতিকথা লিখে থাকেন বিখ্যাতজনেরা। সেই অর্থে জিকরুর রেজা খানম বিখ্যাত কেউ নন বা । আলোচিত ব্যক্তিত্বও নন। সেদিক থেকে দেখলে তার লেখা ‘ছেলেবেলার কথা’-কে গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নেই; কিন্তু তিনি দেখেছেন সময়। তার কলমে উঠে এসেছে সেইসময়, যে সময় দ্রুতই হারিয়ে যাচ্ছে, পালটে যাচ্ছে। আমরা উন্নয়নের স্রোতে পা রেখেছি, পেরিয়েছি অনেকটা পথ । এই পথ এবং সময় দুটোই ভারি গোলমেলে। যেসব দেশ উন্নয়নের ঘোড়ায় চাপে, তাদের সবাইকেই এই ক্রান্তিকাল পেরোতে হয়। নতুনের সঙ্গে পুরাতনের দ্বন্দ্ব, মূল্যবোধের অবক্ষয়, অস্থিরতা, সবকিছুই পার হতে হয়। আজকের উন্নত দেশগুলো, অর্থাৎ আমেরিকা ও ইউরোপকেও এমনি সময় পাড়ি দিতে হয়েছে। আমেরিকার সিভিল ওয়ার, শিল্পবিপ্লবের পরবর্তী ইউরোপের কথা ভাবুন, সে তুলনায় আমরা বরং অনেক বেশি সভ্য আছি। একদিন আমরাও ক্রান্তিকাল পেরিয়ে উন্নত দেশগুলোর সাথে পাল্লা দিতে পারব। সেদিন খুব বেশি দূরে নয়। ছেলেবেলার কথায় উঠে এসেছে সেই সময়। এই বইয়ের নায়ক বলি আর মূল চরিত্র বলি, সে হলো সময়। আজকের সময়ের সাথে অতীতের আর ভবিষ্যতের সময়ের যোগসূত্র গেঁথেছে এই লেখা। জিকরুর রেজা খানমের সুখপাঠ্য গদ্য পাঠককে দ্রুত টেনে নিয়ে যায়, থামতে দেয় না। সময় যেহেতু এই বইয়ের মূল উপপাদ্য, সেকারণে পাঠককে খানিকটা নস্টালজিকও করে। লেখকের রসবোধও এই বইয়ের একটি বড় আকর্ষণ। বইটি সময়-অনিসন্ধিৎসু পাঠকদের ভালো লাগবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।
ছেলেবেলার কথা
জিকরুর রেজা খানম