নানা ধরনের অপরাধ ঘটে থাকে সমাজে। অপরাধের নেপথ্যে থাকে বিচিত্র সব কাহিনি। কাহিনি তৈরিতে থাকে সমাজেরই বিচিত্র সব মানুষ। বিচিত্র এদের মানসিকতা। কখনো প্রত্যক্ষ কখনোবা পরোক্ষভাবে এক এক জন জড়িয়ে পড়ে অপরাধ সংঘটনে। কখনো সুপরিকল্পিত ভাবে, কখনো বা তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে কখনো বা ঘটনাক্রমে এক এক জন অপরাধ করে ফেলে। এই সব অপরাধ কখনো মারাত্মক কখনো বা লঘু ধরনের। সম্মিলিত বা এককভাবে ঘটে থাকে এই সব অপরাধ। কৃত অপরাধের জন্য কেউ অনুশোচনায় ভোগেন, কেউবা নির্বাক থেকে মেনে নেন আইনের শাসন। এই সব অপরাধের কাহিনী জনসমক্ষে প্রচার সাধারণত হয় না। নিরবে নিভৃতে হারিয়ে যায় এই সব অপরাধের কিচ্ছা। অপরাধ কাহিনি নিয়ে লেখা গল্প বাংলা সাহিত্যে বিরল। এবং সেই গল্পগুলো যদি লেখেন একজন বিচারক; যিনি নিজে পুরো অপরাধ কাহিনি শুনে আইনের বিশ্লেষণ করে অপরাধী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের শাস্তি প্রদানের এখতিয়ার রাখেন, তাহলে সেই গল্পগুলো হয়ে ওঠে নিঃসন্দেহে জীবন্ত এবং বিশ্লেষণধর্মী। গ্রন্থভুক্ত গল্পের লেখক আবদুল মওদুদ ছিলেন ঢাকা হাই কোর্টের বিচারপতি। বিচারকের আসনে বসে তিনি নিজে যেসব কেসের মীমাংসা করেছেন সেসব কেসের কাহিনিগুলো অত্যন্ত প্রাঞ্জল ভাষায়, আকর্ষণীয় ভাবে তুলে ধরেছেন। বাংলা গল্পের প্রচলিত কাঠামোর বাইরে এই নতুন স্বাদের গল্প সব বয়সি পাঠককেই তৃপ্তি দেবে, বিমোহিত করবে। আদালত সংস্কৃতি, কারাগারের জীবন, আসামিদের আচার-আচরণ যেমন উঠে এসেছে এসব গল্পে, তেমনি দ্বিচারিণী নারীর কথা, পরকীয়া, জৈবিক তাড়না, দাম্পত্য কলহ, প্রেম, ভালোবাসা মিথ্যা সাক্ষ্য, সাজানো কেস ইত্যাদি কাহিনি তুলে আনা হয়েছে অবলীলায়। আসামিদের মানবিকবোধ, বিনা অপরাধে শাস্তি পাওয়া বিষয়ও এসেছে। প্রতিটি গল্পই বিষয় বৈচিত্র্য অদ্ভুত। অসাধারণ, চিত্তাকর্ষক শিহরণমূলক এবং রোমহর্ষক কাহিনি-নির্ভর এইসব গল্প পাঠককে দেবে ভিন্ন আমেজ, ভিন্ন স্বাদ। এটা নিঃসন্দেহে পাঠতালিকার অন্তর্ভুক্তি হবার দাবি রাখে। এ গন্থের গল্পগুলো মাসিক ‘সমকাল’ পত্রিকায় প্রকাশিত।
ক্রিমিনাল
আবদুল মওদুদ