মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত কৃষ্ণকুমারী নাটক বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ট্র্যাজেডি নাটকের অভিধায় ভূষিত । ট্র্যাজেডির সূত্র মেনে লিখিত এ নাটকে নাট্যকার মধুসূদনের যথার্থ শক্তির পরিচয় পাওয়া যায়। একদিন রাঢ়বঙ্গের মানুষ যেসব অলীক-কুনাট্যরস পান করে মত্ত হয়েছিল মধুসূদন স্বীয় প্রতিভাবলে সেই কুরসকে। সুরসে রূপান্তরিত করেছিলেন। মহাকবি মাইকেল ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দের ৬ আগস্ট নাটকটি লিখতে শুরু করে একই বছরের ৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ। করেন। অর্থাৎ মাত্র এক মাসের মতো সময় তিনি কৃষ্ণকুমারী নাটকের জন্য ব্যয় করেছিলেন। ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দের ৮ ফেব্রুয়ারি শোভাবাজার নাট্যশালায় নাটকটি প্রথম অভিনীত হয়। হিন্দু-প্যাট্রিয়ট পত্রিকায় এ নাটকের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়। উদয়পুরের রাজা ভীমসিংহের একমাত্র । কন্যা কৃষ্ণকুমারীকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া সংকট এবং সবশেষে কৃষ্ণকুমারীর আত্মহত্যার মধ্য দিয়ে এই নাটকের সমাপ্তি। আধুনিক চৈতন্যের অধিকারী মহাবিদ্রোহী মাইকেল মধুসূদন দত্ত আজ অনেকটাই বিস্মৃত, অথচ বাংলা সাহিত্যের নানান উপকরণ তাঁর হাতেই সৃষ্ট। কবি-কথাশিল্পী ও সাহিত্য-সমালোচক সৈয়দ জাহিদ হাসান কৃষ্ণকুমারী নাটকটি নবীন-প্রবীণ পাঠকের জন্য অভিনব আঙ্গিকে সম্পাদনা করে নতুনভাবে মধুসূদনকে পাঠকের সামনে হাজির করানোর যে প্রয়াস গ্রহণ করেছেন তা প্রশংসনীয়। মধুসূদনের সাহিত্যকর্ম নতুন প্রজন্মের পাঠকের কাছে পৌছাতে হলে যথাসম্ভব সহজবোধ্য করে উপস্থাপন করা দরকার। সৈয়দ জাহিদ হাসান। পরিশ্রমী লেখক-গবেষক হিসেবে ইতোমধ্যেই সুনাম অর্জন করেছেন। কৃষ্ণকুমারী নাটক সম্পাদনার ক্ষেত্রেও তার মুনশিয়ানা পাঠককে মোহিত করবে।
কৃষ্ণকুমারী : মাইকেল মধুসূদন দত্ত
সৈয়দ জাহিদ হাসান