পঁচাত্তর পরবর্তী কালপর্বে স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারণ নিষিদ্ধ ছিল। মিছিল-মিটিং তো দূরের। কথা- বঙ্গবন্ধুর নামে শােক প্রকাশ করাও অসম্ভব হয়ে পড়ে। তকালীন সামরিক সরকার নানারকম প্রলোভন দেখিয়ে চরিত্র হনন করার চেষ্টা করে রাজনীতিবিদদের যারা প্রলোভনে পড়তে অস্বীকৃতি জানায় তাদেরকে ।জেলে পুরে অকথ্য নির্যাতন ও হত্যা করা হয় । ৩ নভেম্বর জেলের অন্ধপ্রকোষ্ঠে জাতীয় চার নেতা হত্যাকাণ্ড তারই প্রমাণ।১৯৭৫-পরবর্তী বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের রাজনীতিকে মোনায়েম সরকার কিছুতেই মেনে নিতে পারিনি। তাই। নতুন স্বপ্নে বুক বেঁধে স্বেচ্ছা-নির্বাসনে ভারত যান ।ভারতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা।প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সাধ্যমত চেষ্টা করেন।দেশ-বিদেশে তখন যারা মুজিব-আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করতেন তাদের সাথে পত্রের মাধ্যমে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন পত্রিকা-লিফলেট।ছাপিয়ে ও ছাপাতে সাহায্য করে ব্যাপক জনমত সৃষ্টি করেন।১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত সময়ে মোনায়েম সরকার কি করেছেন, তাঁর সঙ্গে আর কারা কারা কি কাজ করেছেন সেসবের লিখিত দলিলই হলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম, আমার স্বেচ্ছা-নিৰ্বাসন’ গ্রন্থটি ।শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডের পরে দেশে-বিদেশে কারা কি ভূমিকা রেখেছেন এ গ্রন্থ থেকে তার একটি সুস্পষ্ট দিশা পাওয়া যাবে । আজকে যারা মুজিব-প্রেমিক বলে পরিচয় দিচ্ছেন, তাদেরও কারো কার চরিত্র বোঝা যাবে । আগামী দিনে যারা মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে ও লিখতে চাইবেন। তাদের জন্য তথ্যবহুল এই গ্রন্থটি একটি আকরগ্রন্থ হিসেবেই বিবেচিত হবে।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম
মোনায়েম সরকার