বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এক সুদীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের সুফল। বাঙালির মনোগভীরে একটি স্বাধীন দেশের আকাক্সক্ষা প্রাচীনকাল থেকেই প্রচ্ছন্ন ছিল। যে কারণে বাঙালির বহু বিদ্রোহ, সংগ্রাম, বিক্ষোভের পরিচয় ইতিহাসের পাতায় মুদ্রিত রয়েছে। সময়ের সাথে সাথে স্বাধীনতার সে-আকাক্সক্ষা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে ওঠে।
১৭৫৭ সাল থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত ভারতীয় উপমহাদেশ ছিল ব্রিটিশ শাসনাধীন। দীর্ঘ সংগ্রাম ও ধারাবাহিক বিদ্রোহে ব্রিটিশদের কবল থেকে মুক্ত হয় উপমহাদেশ। দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত ও পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম ছিল ইতিহাসের এক নির্মম পরিহাস। কেবলমাত্র ধর্মের কারণে হাজার হাজার মাইল দূরত্বের (পূর্ববাংলা ও পাকিস্তান অঞ্চলকে) এক সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়। পাকিস্তানি শাসনেও ছিল ঔপনিবেশিক চারিত্র্য। রাজনৈতিক পীড়ন, অর্থনৈতিক বৈষম্য, ভাষা ও সাংস্কৃতিক পার্থক্য দিনকে দিন সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে, ফলে বাঙালিরা পাকিস্তানি শাসন-শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। বাঙালি জাতিসত্তাবিরোধী ধর্মান্ধ পাকিস্তানি সামরিক শক্তির বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে বাঙালি গৌরব ও সাহসের পরিচয় দিয়ে বিজয় লাভ করে। মুক্তিযুদ্ধের বিজয় গাথা বাংলাদেশের নবীন-প্রবীণ গল্পকারদের আকৃষ্ট করে। মুক্তিযুদ্ধের অসংখ্য ঘটনা থেকে গল্পকাররা কাহিনি নির্বাচনে নিজস্ব জীবন জিজ্ঞাসা ও ব্যক্তিত্ববোধেয় প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। গল্পকারদের বয়ানে, নির্মিতিনৈপুণ্যে, অনেক গল্প হয়েছে শিল্পোত্তীর্ণ।
মুক্তিযুদ্ধের ছোটগল্পে রীতি-নির্মিতি
আরজুমন্দ আরা বানু