ষাটের দশকের উত্তাল দিনগুলোতে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনে আয়োজিত ১৯৬৯ সালের একুশের অনুষ্ঠানে সৈয়দ শামসুল হক পাঠ করেন তার কবিতা হারাধনের দশটি ছেলে, যার শেষ লাইন ছিল বাংলা মায়ের লড়াকু যোদ্ধাদের প্রতি নিবেদিত:
হারাধনের একটি ছেলে একলা লড়াই করে, লক্ষকোটি ভাই আছে তার আলোক-জ্বালা ঘরে।’
১৯৭০-এর একুশের অনুষ্ঠানে তিনি কবিতা পাঠ করেন এবং ১৯৭১-এর একুশে ফেব্রুয়ারিতে বাংলা একাডেমির বটতলায় কবিতাপাঠে অংশ নেন।
১৯৭১ সালের ২২ মার্চ লেখক সংগ্রাম শিবির বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে যে প্রতিবাদী ও বিপ্লবী কবিতাপাঠের আয়োজন করে তাতেও কবিতা পাঠ করেন সৈয়দ শামসুল হক।
১৯৭১ সালের অগ্নিঝরা মার্চ মাসে দৈনিক পাকিস্তান -এর সম্পাদকীয় পাতায় সিকানদার আবু জাফর, শামসুল রাহমান এবং সৈয়দ শাসুল হকের তিনটি প্রতিবাদী কবিতা পৃথক তিনদিন প্রকাশিত হয়। সৈয়দ শামসু হকের কবিতাটির শিরোনাম ছিল পহেলা মার্চ ১৯৭১:
‘দ্যাখো আমি নিরস্ত্র।
কিন্তু আমার আছে সেই অস্ত্র যা নিঃশেষিত হয় না, প্রতি ব্যবহারে তীক্ষ্ণ থেকে তীক্ষ্ণতর হয়ে ওঠে-আমার প্রাণ
আমার তো একটি প্রাণ নয়, কোটি কোটি প্রাণ।’
বিবিসি বাংলা থেকে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর তাঁর কণ্ঠেই শোনা যায় স্বাধীন বাংলাদেশের বিজয়ী আবির্ভাবের সংবাদটি।
মুক্তিযুদ্ধ ছিল কথাসাহিত্যিক সেয়দ শামসুল হকের প্রিয় ও নিত্য প্রসঙ্গ। বিষয়ের অনন্যতা ও আঙ্গিকের বৈচিত্র্য তাঁর মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস পাঠকের অভিজ্ঞতাকে বিস্তূত করে নিঃসন্দেহে।
মুক্তিযুদ্ধের শ্রেষ্ঠ উপন্যাস
সৈয়দ শামসুল হক