হঠাৎ খুব কোলাহলে, ভীষণ রকমের ব্যস্ততায়, অখণ্ড কোনো নীরবতায় কিংবা বিচ্ছিন্ন কোনো অবসরে, আনমনা বেখেয়ালে প্রিয় কাউকে বলার জন্য মনের কোণে এক ঝলক বিদ্যুতের মতো উঁকি দেয় অনেক কথা। বহু আগে বলতে না-পারা অজস্র শব্দাবলি চমকে ওঠে হৃদয়ের রঙিন পর্দায়। ফুলের বর্ণিল কোনো রঙে, কবিতার ছন্দে, গানের দু-একটা কলিতে, মুক্ত বিহঙ্গের স্বাধীন ডানায় অথবা আকাশের নীলে তারা মিশে থাকে, জড়িয়ে থাকে অবিচ্ছিন্নতায়।
অব্যক্ত সেসব কথা ফিরে আসে খুব গোপনে, প্রকাশিত হতে চায় অন্যরকম তীব্রতায়। খুব কাছের কেউ, পাশাপাশি থাকার কেউ, অনেক দিন আগে হারিয়ে যাওয়া প্রিয় কোনো বন্ধু, অনুকরণীয় কোনো ব্যক্তি, না চাইতেও হয়ে যাওয়া শত্রু, ভুল করে পাওয়া প্রেমিক অথবা বিলাসী প্রেমিকার জন্য জমিয়ে রাখা কথাগুলো অভিমান হয়ে ঝরে পড়ে কলমে আর কালিতে। সেগুলো মুখে বলা যায় না, সামনাসামনি কিংবা টেলিফোনেও না। সমস্ত আঁধার, একাকিত্ব, নিঃসঙ্গতা আর শূন্যতাকে ঘিরে ধরে থাকা সেই না-বলা কথা, সেই অপূর্ণ গোপন ইচ্ছে খসখসে সাদা কাগজে কালো কালি হয়ে ঝরে পড়ে জনম জনম ধরে, নীল নৈঃশব্দের চিঠিতে।
নীল নৈঃশব্দ্যের চিঠি
অপরাজিতা অর্পিতা