রাষ্ট্রভাষা-আন্দোলনের সত্তর বছর সমাগত। এ আন্দোলনে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণকারী প্রায় সবাই পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। এখনো যারা জীবিত আছেন, তাদের মধ্যে জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম অন্যতম। তিনি ১৯৪৮ সালের ভাষা-আন্দোলন খুব কাছ থেকে দেখেছেন, ১৯৫২ সালের ভাষা-আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। এ আন্দোলনে ছবি তোলা ছাড়াও রচনা করেছেন। এর প্রামাণ্য ইতিহাস। শুধু রাষ্ট্রভাষা-আন্দোলন নয়, বাঙালির জাতীয় জীবনের তাৎপর্যপূর্ণ সব ঐতিহাসিক ঘটনায় প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণকারী তিনি। রাষ্ট্রভাষা-আন্দোলন, স্বাধিকার-সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধ সর্বত্রই তার সরব উপস্থিতির প্রমাণ মেলে। জাতির দুর্দিনে বুক চিতিয়ে দাঁড়াতে গিয়ে সহ্য করেছেন অসহনীয় জুলুম-নির্যাতন। একজন শৌখিন ফটোগ্রাফার হিসেবে ১৯৫২ সালে রাষ্ট্রভাষা-আন্দোলনের যে ছবিগুলো তুলেছিলেন, তা আজ ইতিহাসের প্রামাণ্য নিদর্শন। তার তোলা ছবি ব্যতীত ভাষা-আন্দোলনের ইতিহাস রচনা অসম্ভব।
জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের রাষ্ট্রভাষা-আন্দোলনে অবদান নিয়েই এ গ্রন্থ। তার তোলা ভাষা-আন্দোলন সম্পর্কিত ছবিগুলোও এতে স্থান পেয়েছে। গ্রন্থটি রচনা করেছেন ইতিহাস-ঐতিহ্যসন্ধ্যানী গবেষক ড. এম আবদুল আলীম। ভাষা-আন্দোলনের সময়কার দলিলপত্র, পত্র-পত্রিকা, গোয়েন্দা প্রতিবেদন, ডায়েরি, স্মৃতিকথা, গবেষণাগ্রন্থ-প্রবন্ধ প্রভৃতি উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করে গ্রন্থটির কলেবর সাজিয়েছেন। অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম নিজে বইটির আদ্যোপান্ত দেখে দিয়েছেন, যা গ্রন্থটিকে অধিকতর প্রামাণ্য করেছে। বইটি ইতিহাসের কৌতূলী পাঠক এবং গবেষকদের প্রয়োজন মেটাবে বলে দৃঢ়তার সঙ্গে বলা যায়।
রাষ্ট্রভাষা-আন্দোলনে রফিকুল ইসলাম
এম আবদুল আলীম