বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অসংখ্য শিক্ষক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, চলচ্চিত্রকারসহ বিশেষ কিছু পেশার লোককে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে শুরু হওয়া এই হত্যাযজ্ঞ মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি জাতির বিজয় অর্জনের পরও থেমে থাকেনি। পাকিস্তানি বাহিনীর দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও শান্তিবাহিনীর সদস্যরা এই পেশাজীবীদের হত্যার নীলনকশা বাস্তবায়ন করতে থাকে ১৯৭২ সালের জানুয়ারি মাসেও। মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে যায়। তবে বিগত ৪৭ বছরে সরকারি কি বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান ‘শহীদ বুদ্ধিজীব ‘দের নাম-পরিচয় একত্রিত করতে পারেনি। এমনকি সম্ভব হয়নি তাঁদের প্রকৃত সংখ্যা নিরূপণ ।
বিভিন্ন বই, পত্রপত্রিকা ও নথিপত্র ঘেঁটে এ পর্যন্ত মোট ৩২৯ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর নাম-পরিচয় ও মুক্তিযুদ্ধকালীন অবদানের কথা সংগ্রহ করা গেছে। এঁদের মধ্যে ছবি পাওয়া গেছে মাত্র ১৬২ জনের। সন্ধান পাওয়া শহীদ বুদ্ধিজীবীদের জীবনবৃত্তান্ত, মুক্তিযুদ্ধে তাঁদের অবদান ও শহীদ হওয়ার ঘটনা যথাসম্ভব সংকলিত করে প্রকাশিত হলো ‘শহীদ ‘বুদ্ধিজীবী কোষ’ । এখানে বর্ণিত শহীদ বুদ্ধিজীবীদের জীবন ও চিন্তা থেকে মুক্তিযুদ্ধের অনেক বাঁক, অনেক চড়াই-উৎরাই চোখে পড়ে। তাঁরা বারবার আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেন কেমন সমাজ ও দেশ তাঁরা চেয়েছিলেন, আর আমরা কী নির্মাণ করেছি।
শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ
ফাহিমা কানিজ লাভা