আধুনিক বিশ্বের ইতিহাসে ভারতীয় উপমহাদেশ নানা কারণে আলোচিত-আলোড়িত। কৃষি, শিক্ষা, সাহিত্য-সংস্কৃতি, যুদ্ধ, বিজ্ঞান, আবিষ্কার, উদ্ভাবন, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি-সবদিক দিয়েই ভারতীয় উপমহাদেশ অনন্য ও স্বকীয়তায় পূর্ণ। ৭১২ সালে মুহম্মদ বিন কাশেম (৬৯৫-৭১৫) সিন্ধুরাজ দাহিরকে পরাজিত করে ভারতে বিদেশিদের আড়মনের পথ সহজ করে দেন।
১২০৫ সালে বিপুলসংখ্যক সৈন্য নিয়ে ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বখতিয়ার খিলজি নদীয়া (বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের একটি জেলা) আক্রমণ করেন। তিনি এতটাই ক্ষিপ্রতার সঙ্গে ঘোড়া চালনা করেন যে, তার সঙ্গে মাত্র ১৭-১৮ জন সেনা আসতে পেরেছিল। ১৫২৬ সালে মির্জা জহিরউদ্দিন মুহাম্মদ বাবর হরিয়ানার পানিপথ নামক স্থানে প্রথম যুদ্ধে দিল্লির লোদি রাজবংশের সুলতান ইবরাহিম লোদিকে (১৪৮০-১৫২৬) পরাজিত করে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। ১৬৩৩ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি মহানন্দা বদ্বীপের হরিহরপুরে একটি ফ্যাক্টরি স্থাপনের মাধ্যমে বাংলায় (ভারতের পশ্চিমবঙ্গে) ব্যাবসা-বাণিজ্য শুরু করে। ১৭৫৬ সালের এপ্রিল মাসে নবাব সিরাজউদ্দৌলার (১৭৩২-১৭৫২) ক্ষমতা গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে নবাব এবং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মধ্যে বিরোধ অনিবার্য হয়ে পড়ে। ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন সকাল ৮টায় মুর্শিদাবাদ জেলার পলাশী প্রান্তরে নবাব সিরাজউদ্দৌলা এবং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয় এবং নবাব পরাজিত হন। বাংলাসহ পুরো ভারতবর্ষ চলে যায় ব্রিটিশদের অধীন। দীর্ঘ নীরবতার পর আস্তে আস্তে শুরু হয় স্বদেশি আন্দোলন। সুদীর্ঘ ১৯০ বছর পর ভারত আবার স্বাধীন হয়; তবে দুটি দেশরূপে-ভারত ও পাকিস্তান, যার ভিত্তি হয় ধর্ম অর্থাৎ দ্বিজাতিতত্ত্ব। ১৯০০-১৯৭১ সময়ে সংঘটিত নানা আন্দোলন, সম্মেলন, চুক্তি ও আইন নিয়ে একজন দক্ষ ও যোগ্য জহুরির মতো ড. ডি. এম. ফিরোজ শাহ্ আলোচ্য গ্রন্থ উপমহাদেশের স্বাধীনতা-আন্দোলন রচনা করেছেন, যেটি সকল শ্রেণির পাঠকের ভালো লাগবে-এ আশা করা যায়।
উপমহাদেশের স্বাধীনতা-আন্দোলন
ড. ডি. এম. ফিরোজ শাহ্