এদেশে শ্যামল রঙ রমণীর সুনাম শুনেছি কাব্য রচনা করে যিনি বাংলা সাহিত্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন এবং এখনো স্বমহিমায় টিকে আছেন, এ গ্রন্থ সেই কবিকে নিয়ে। আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও সাহিত্য-সংস্কৃতির গভীর পঠন-পাঠনে নিজের কাব্যবোধ শাণিয়ে নিয়েছিলেন। পঞ্চাশের দশকের শুরুতে ঢাকায় বসবাস ও পড়ালেখা করলেও এবং ‘দৈনিক সংবাদে’র সাব-এডিটর পদে চাকুরি নিলেও; মাটির টানে গ্রামে ফিরে আসেন। পরবর্তীকালে বাংলা ও ইংরেজি উভয় সাহিত্যে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন দেশের ঐতিহ্যবাহী দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। কর্মজীবনে ছিলেন সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক। এতদ্সত্ত্বেও নিভৃতচারী এ কবি বাস করতেন পাবনা জেলার পদ্মা-তীরবর্তী চরকোমরপুর গ্রামের নিভৃত কুটিরে। সেখানে বসেই রচনা করেন চল্লিশোধিক গ্রন্থ। সাহিত্য-সাধনার স্বীকৃতি-স্বরূপ লাভ করেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও একুশে পদক।
গ্রামে বাস করতেন বলে তথাকথিত শহুরে সাহিত্য-সংস্কৃতির ঝুনঝুনি-ওয়ালাদের কাছে তিনি ছিলেন উপেক্ষিত। তাঁদের কাছে উপেক্ষিত হলেও, আপন প্রতিভা এবং সাধনায় বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে হয়ে ওঠেন অনিবার্য। ১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর ঢাকাকেন্দ্রিক যে নতুনধারার সাহিত্য গড়ে ওঠে, তিনি সে-ধারারই একজন শক্তিমান কবি; যাঁর নাম শামসুর রাহমান, আল মাহমুদ, শহীদ কাদরী, সৈয়দ শামসুল হক প্রমুখের পাশে অনায়াসেই স্থান পেয়েছে।
ওমর আলী : স্মৃতি ও কীর্তি গ্রন্থে এম আবদুল আলীম গভীর শ্রম ও নিষ্ঠায় বহু কীর্তিজনের মেধা-মননের দীপ্তিতে দীপ্তিমান করেছেন ওমর আলীর জীবন ও কীর্তিকে। কবিতার পাঠক, সাহিত্য-সংস্কৃতির গবেষক, কবির ভক্ত-অনুরাগী, সুহৃদ-স্বজন সকলেই বইটি পড়ে বিশেষভাবে উপকৃত হবেন।
ওমর আলী : স্মৃতি ও কীর্তি
এম আবদুল আলীম