শ্রেষ্ঠ রাঁধুনি প্রতিযোগিতা বাঙালির সংস্কৃতি-চর্চায় নতুন হলেও ইদানীং ঘটা করে পালন করা হয়। গল্পের ‘আমাদের টিভি’ সেই ধারাবাহিকতায় নতুনত্ব নিয়ে হাজির হয়েছে। ঈদের দিন তারা আয়োজন করেছে দেশব্যাপী লাইভ শ্রেষ্ঠ রাঁধুনি পুরস্কার। বিত্তহীন কবিয়াল হাসান আলীর মেয়ে রুকু তার রন্ধনশৈলীর ভরসায় সেই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। কিন্তু প্রতিযোগিতাকালীন বিশেষজ্ঞদের লাইভ প্রোগ্রামে নির্দেশিত মসলাপাতি দূরে থাক, খাসির রানের মাংসটুকুও জোগাড় করতে পারে না— তার বাবা যে এবার কোরবানিই দিতে পারেনি।
ধনীদের দান করা মাংসের ভাগা আর অকিঞ্চিৎ মসলা দিয়ে কথিত মাংসের রান্না শেষ করে রুকু। ‘আমাদের টিভি’ কর্তৃক রুকুর জন্য প্রেরিত লাইভ মেন্টর মৃদুল ও রুকু ঘটনাপরম্পরায় অন্য এক সম্পর্কে জড়ায়। তারা স্বপ্ন দেখতে থাকে, বিচারকেরা মসলাপাতি বা মাংসের শ্রেষ্ঠত্ব নয়, রাঁধুনির হৃদয় ও মনের শ্রেষ্ঠত্বই বিচার করবে।
কিন্তু তা যথারীতি কোনোদিন হয়ে ওঠে না। রুকু জীবন দিয়ে প্রমাণ করে, আমরা যাকে আমাদের সংস্কৃতি বলি, তা আসলে আমাদের নয়— রাজনীতি ও ধর্মনীতির মতো, তা বহু আগেই এক বিশেষ শ্রেণির অধিকারে চলে গেছে।
উপন্যাসের পরতে পরতে রুকুর করুণ জীবন ও জীবনাবসানে বিধৃত হয়েছে কীভাবে ‘আমাদের’ সবকিছু ‘তাহাদের’ হয়ে গেছে।
[উপন্যাসের হতভাগিনী চরিত্র রুকুর আর্জি: আপনি যদি মধ্যবিত্ত বা নিম্নবিত্ত বা বিত্তহীন হয়ে থাকেন, উপন্যাস পাঠে রুকুর জীবন এবং জীবনের পরিণতি দেখতে পারেন, দেখে কাঁদতেও পারেন, কিন্তু এলিট শ্রেণির জন্য এ উপন্যাসে প্রবেশ নিষিদ্ধ।]
শ্রেষ্ঠ রাঁধুনি পুরস্কার
ফয়েজ তৌহিদুল ইসলাম